0 / 0

যাকাতের নিসাব পূর্ণ করার জন্য এক জাতের সম্পদকে অন্য জাতের সাথে একত্রিত করা হবে না

প্রশ্ন: 97727

আমার একখণ্ড জমি আছে। এতে গম ও যব হয়। এতে কি যাকাত ফরয হবে?

উত্তর

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

শস্যদানা ও ফলফলাদিতে যাকাত ফরয হয়; যদি নিসাব পরিমাণে পৌঁছে। নিসাব হলো পাঁচ ওয়াসাক। এক ওয়াসাকের পরিমাণ ষাট সা’। এক সা’তে চার মুদ্দ। এক মুদ্দ মাঝারি কাঠামোর পুরুষ লোকের দুই মুঠোর সমান। দলিল হলো আবু সাঈদ (রাঃ) এর হাদিস, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: কোন শস্যদানা ও খেজুর পাঁচ ওয়াসাকে না পৌঁছা পর্যন্ত সদকা নেই।[সহিহ মুসলিম (৯৭৯)]

আলেমদের ইজমার ভিত্তিতে গম ও যব এমন শ্রেণীয় সম্পদ যেগুলোতে যাকাত ফরয হয়। সুতরাং জমিতে যদি নিসাব পরিমাণ গম বা যবের উৎপাদন হয় তাহলে আপনার উপর এর যাকাত ফরয হবে। আর যদি গম ও যবের উৎপাদন নিসাব পরিমাণ না হয়; কিন্তু একটিকে অপরটির সাথে মিলালে নিসাব পরিমাণে পৌঁছে সেক্ষেত্রে আপনার উপর যাকাত ফরয হবে না। যেহেতু আপনি যবের নিসাবের মালিক নন; আবার গমের নিসাবের মালিকও নন।

বিস্তারিত বিবরণ হলো: শস্যদানা ও ফলফলাদির একটি জাতকে অপর জাতের সাথে মিলানোর ক্ষেত্রে অবস্থা দুটোর বেশি নয়:

১। উৎপাদিত ফসল একজাতীয়; কিন্তু প্রকার ভিন্ন। যাকাতের নিসাব পূর্ণ করার ক্ষেত্রে এটির এক প্রকারকে অপর প্রকারের সাথে মিলানো হবে। তথা সুক্কারি খেজুরকে বারহি খেজুরের সাথে যোগ করা হবে। অনুরূপভাবে এক প্রকারের গমকে অপর প্রকারের গমের সাথে যুক্ত করা হবে। এক প্রকারের কিসমিসকে অপর প্রকারের কিসমিসের সাথে যুক্ত করা হবে। এভাবে অন্যান্য শস্য বা ফলের ক্ষেত্রেও।

এক জাতীয় ফসলের এক প্রকারকে অপর প্রকারের সাথে মিলানোর প্রমাণ পাওয়া যায় আবু সাঈদ খুদরি (রাঃ) এর পূর্বোক্ত হাদিসের সার্বিকতা থেকে। তা এভাবে যে, যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়া সাল্লাম সাধারণভাবে খেজুরের উপর যাকাত ফরয করেছেন। এটি সুবিদিত যে, খেজুরের মধ্যে নানা প্রকারের খেজুর অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তিনি এক প্রকারের খেজুরকে অপর প্রকার থেকে আলাদা করার নির্দেশ দেননি।

ইবনে কুদামা (রহঃ) “আল-মুগনী” গ্রন্থে (২/৩১৬) বলেন: “তাদের মধ্যে এ নিয়ে কোন মতভেদ নেই যে, নিসাব পরিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে এক জাতের অন্তর্ভুক্ত সকল প্রকারের একটিকে অপরটির সাথে যোগ করতে হবে।”[সমাপ্ত]

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) “আল-শারহুল মুমতি” গ্রন্থে (৬/৭৩) বলেন: “এক প্রকারকে অপর প্রকারের সাথে যোগ করতে হবে। উদারণতঃ সুক্কারি (খেজুর)-কে বারহি (খেজুর)-এর সাথে যুক্ত করতে হবে। অনুরূপভাবে গমের ক্ষেত্রে, মায়িয়্যা, লুক্বাইমী, হিনত্বা ও আল-জারিবার একটিকে অপরটির সাথে যুক্ত করতে হবে।”[সমাপ্ত]

২। ফসলের জাত ভিন্ন হওয়া। এক্ষেত্রে নিসাব পরিপূর্ণ করার জন্য এক জাতকে অপর জাতের সাথে মিলানো হবে না। তথা নিসাব পরিপূর্ণ করার জন্য গমের সাথে যবকে, খেজুরের সাথে কিসমিসকে, চালের সাথে গমকে মিলানো হবে না। যেহেতু জাত ভিন্ন। যেমনিভাবে গরুর সাথে উটকে কিংবা গানাম (ছাগল-ভেড়া)-কে মিলানো হয় না। কারণ জাত ভিন্ন।

শাইখ উছাইমীন (রহঃ) “আল-শারহুল মুমতি” গ্রন্থে (৬/৭৩) বলেন: “এক জাতকে অপর জাতের সাথে মিলানো হবে না। তাই যদি কোন ব্যক্তির একটি কৃষি খামার থাকে এবং এর অর্ধেকে যব হয়; আর বাকী অর্ধেকে গম হয় এবং প্রত্যেক জাতের ফসল অর্ধেক নিসাব পর্যন্ত পৌঁছে; সেক্ষেত্রে এক ফসলকে অপর ফসলের সাথে মিলানো হবে না। যেহেতু জাত ভিন্ন। যেমনিভাবে গরুকে উটের সাথে কিংবা গানাম (ছাগল-ভেড়া)-র সাথে মিলানো হয় না। যেহেতু জাত আলাদা।”[পরিমার্জিতভাবে সমাপ্ত]

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আপনার গম বা যবের যেটা নিসাব পরিমাণে পৌঁছে সেটার যাকাত পরিশোধ করা আপনার উপর আবশ্যক। আর যেটা নিসাব পরিমাণে পৌঁছেনি সেটার যাকাত নেই।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android