আমার স্ত্রীর উপর কিছু রোযা আগে থেকেই বাকী ছিল। কিন্তু সে ঠিকভাবে মনে করতে পারছে না যে, কয়দিনের রোযা। এখন সে কী করবে?
যে নারীর উপর রমযানের কিছু কাযা রোযা বাকী আছে কিন্তু তিনি সংখ্যা ভুলে গেছেন
প্রশ্ন: 118281
আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা
যিনি সফরের ওজর কিংবা রোগজনিত ওজর কিংবা হায়েয বা নিফাসজনিত ওজরের কারণে রমযানের কিছু রোযা রাখতে পারেননি তার উপর ওয়াজিব হল— সে রোযাগুলোর কাযা পালন করা। দলিল হচ্ছে আল্লাহ্র বাণী: “আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে।”[সূরা বাকারা, ২:১৮৪]
আয়েশা (রাঃ) জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন: হায়েযের ক্ষেত্রে রোযা কাযা পালন করতে হয়; কিন্তু নামায কাযা পালন করতে হয় না কেন? জবাবে তিনি বলেন: "আমরা হায়েযগ্রস্ত হতাম; তখন আমাদেরকে রোযার কাযা পালন করার নির্দেশ দেয়া হত, কিন্তু নামাযের কাযা পালন করার নির্দেশ দেয়া হত না।"[সহিহ মুসলিম (৩৩৫)]
আপনার স্ত্রী যদি কতদিনের রোযার কাযা পালন তার উপর বাকী রয়েছে সেটা ভুলে যান এবং তার সন্দেহ হয় যে, উদাহরণতঃ ছয়দিন কিংবা সাতদিন; তাহলে তার উপর কেবল ছয়দিনের রোযা কাযা পালন করাই আবশ্যক। কেননা মূলবিধান হচ্ছে— দায়িত্বমুক্ত থাকা। তবে তিনি যদি সতর্কতামূলক সাতদিন রোযা রাখেন তাহলে নিশ্চিতভাবে তার দায়িত্বমুক্ত হওয়ার জন্য সেটাই ভাল।
আর যদি তিনি কোন সংখ্যাই মনে করতে না পারেন তাহলে যতদিন রোযা রাখলে তার দায়িত্বমুক্ত হয় বলে তিনি প্রবল ধারণা করেন ততদিন রোযা রাখবেন।
শাইখ বিন উছাইমীন (রহঃ) কে প্রশ্ন করা হয়েছিল: জনৈক নারীর ওপর রমযানের কিছুদিনের রোযা কাযা আছে। কিন্তু তিনি সন্দেহে পড়ে গেছেন যে, সেটা কি চারদিন; নাকি তিনদিন। এখন তিনি তিনদিন রোযা রেখেছেন। এমতাবস্থায় তার উপর কী আবশ্যক?
জবাবে তিনি বলেন: "যদি কোন মানুষ সন্দেহে পড়ে যান যে, তার উপর কয়দিনের রোযা কাযা পালন করা ওয়াজিব; সেক্ষেত্রে তিনি কম সংখ্যাটাই ধরবেন। যদি কোন নারী বা পুরুষ সন্দেহ করেন যে, তার উপর কি তিনদিনের রোযা কাযা আছে; নাকি চারদিনের? সেক্ষেত্রে তিনি কম সংখ্যাটাই ধরবেন। কেননা কম সংখ্যাটাই নিশ্চিত; বেশি সংখ্যাটা সন্দেহপূর্ণ। আর মূল বিধান হলো— দায়িত্বমুক্ত থাকা। কিন্তু তা সত্ত্বেও সতর্কতা হলো—সন্দেহের দিনগুলোরও কাযা পালন করা। কেননা যদি সে দিনটির রোযা তার ওপর ওয়াজিব থাকে তাহলে তো তার দায়িত্ব অবমুক্ত হল। আর যদি ওয়াজিব না হয়ে থাকে তাহলে সেটা নফল রোযা হিসেবে গণ্য হবে। আল্লাহ্ তাআলা কোন নেক আমলের প্রতিদান নষ্ট করেন না।[নুরুন আলাদ দারব ফতোয়াসমগ্র থেকে সমাপ্ত]
আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।
সূত্র:
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব
সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ