0 / 0

যে ব্যক্তি হজ্জ কিংবা উমরা পালনে ইচ্ছুক সে মীকাতে কি কি করবে?

প্রশ্ন: 109225

প্রশ্ন: যে ব্যক্তি হজ্জ কিংবা উমরা পালনে ইচ্ছুক সে মীকাতে কি কি করবে?

উত্তর

আলহামদুলিল্লাহ ও রাসুলে আল্লাহ ও তাঁর পরিবারের উপর সালাম ও প্রশংসা

আলহামদুলিল্লাহ।

মীকাতেপৌঁছার পরগোসল করা ওসুগন্ধিলাগানো সুন্নত।যেহেতুবর্ণিত আছেযে, নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরামকালেসেলাইকৃত(অর্থাৎঅঙ্গ-প্রত্যঙ্গেরআদলেতৈরী-অনুবাদক)কাপড় থেকে মুক্তহয়েছেন এবংগোসল করেছেন।এবং যেহেতুসহিহ বুখারী ওসহিহ মুসলিমেআয়েশা (রাঃ)থেকেসাব্যস্তহয়েছে যে,তিনি বলেন: “নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম এরইহরামেরকারণে আমিতাঁকেসুগন্ধিলাগিয়ে দিতামএবং তাঁর হালালহওয়ার কারণেবায়তুল্লাহ্‌তাওয়াফ করারআগেও সুগন্ধিলাগিয়েদিতাম।” আয়েশা(রাঃ) যখনহায়েযগ্রস্তহয়ে ইহরাম করলেনতখনও নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকেগোসল করেহজ্জের ইহরামবাঁধারনির্দেশ দিলেন।আসমা বিনতেউমাইস (রাঃ)যখনযুলহুলাইফাতেসন্তান প্রসবকরলেন তখন নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকেওগোসল করার এবংকাপড়ের পট্টিবেঁধে ইহরামকরার নির্দেশদিলেন। এতেপ্রমাণিত হয়যে, কোন নারীযদি মীকাতেপৌঁছেন এবংতিনিহায়েযগ্রস্তকিংবানিফাসগ্রস্তথাকেন তিনিগোসল করবেনএবং সবার সাথেইহরাম করবেন। অন্যহাজী যা যাকরে তিনিও তাতা করবেন;শুধু বায়তুল্লাহ্‌তাওয়াফ ছাড়াযেমনটি নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামআয়েশা (রাঃ) ওআসমা (রাঃ)কেসে নির্দেশদিয়েছেন।

যে ব্যক্তিইহরাম করতেইচ্ছুক তারউচিত নিজের গোঁফ,নখ, নাভিরনীচের পশম,বগলের পশমইত্যাদির যত্মনেয়া।প্রয়োজন হলেএগুলো কেটেনেওয়া। যাতে করে,ইহরাম করার পরইহরামঅবস্থায়এগুলো কাটারপ্রয়োজন নাহয়। কেননা নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামসবসময় এগুলোরযত্ন নেয়ার নির্দেশদিয়েছেন। সহিহবুখারী ও সহিহমুসলিমে আবুহুরায়রা (রাঃ)থেকেসাব্যস্তহয়েছে যে,তিনি বলেন:রাসূলুল্লাহ্‌সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লামবলেছেন: “স্বভাবগতবিষয় পাঁচটি:খতনা করা,নাভির নীচের পশমকাটা, গোঁফকাটা, নখ কাটাও বগলের পশমউফড়ে ফেলা।” সহিহমুসলিমে আনাস(রাঃ) থেকেবর্ণিত যে,তিনি বলেন: “আমাদের জন্যগোঁফ ছাটা, নখকাটা, বগলেরপশম উপড়ে ফেলাও নাভির নীচেরপশম সেভ করারসময় নির্ধারণকরে দেয়াহয়েছে: আমরা যেনচল্লিশ দিনেরবেশি সময় দেরিনা করি।” এহাদিসটি ইমামনাসাঈ এ ভাষায়সংকলন করেছেনযে,, “রাসূলুল্লাহ্‌সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামআমাদের জন্যসময় নির্ধারণকরে দিয়েছেন”। ইমামআহমাদ, ইমামআবু দাউদ ও ইমামতিরমিযিহাদিসটি ইমামনাসাঈর ভাষায়সংকলনকরেছেন। আরপক্ষান্তরে,ইহরামকালেমাথার কোন চুলকর্তন করাশরিয়তসম্মতনয়; পুরুষদেরজন্যেও নয়,নারীদেরজন্যেও নয়।

দাঁড়ি সেভকরা কিংবাদাঁড়ির কিছুঅংশ কাটা সবসময়হারাম। বরংদাঁড়ি ছেড়েদিতে হবে।যেহেতু সহিহবুখারী ও সহিহমুসলিমে ইবনেউমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতহয়েছে যে,তিনি বলেনরাসূলুল্লাহ্‌সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন: “তোমরামুশরিকদেরবিপরীত কর।দাঁড়ি ছেড়েদাও এবং গোঁফ ছাটাইকর”। ইমামমুসলিম তাঁর ‘সহিহ’গ্রন্থে আবুহুরায়রা (রাঃ)থেকে বর্ণনাকরেন তিনিবলেনরাসূলুল্লাহ্‌সাল্লাল্লাহুআলাইহি্ ওয়াসাল্লামবলেছেন: “তোমরাগোঁফ ছাটাইকর, দাঁড়িছেড়ে দাও এবংঅগ্নিপূজারীদেরবিপরীত কর।”

এ যামানায়অনেক লোকেরমধ্যে এসুন্নতেরখিলাফ করার,দাঁড়িরবিরুদ্ধে যুদ্ধকরার, কাফের ওনারীদের সাথেসাদৃশ্য গ্রহণকরার মহামুসিবতবিদ্যমান।বিশেষতঃ যারাইলম অর্জন ওবিতরণের সাথেসম্পৃক্ততাদের মধ্যেও।ইন্না লিল্লাহিওয়া ইন্নাইলাহিরাজিউন। আমরাআল্লাহ্‌রকাছেপ্রার্থনাকরছি তিনিযেন, আমাদেরকেও সর্বস্তরেরমুসলমানকেসুন্নাহ্‌অনুসরণ করার ওআকঁড়ে ধরারএবং সুন্নাহ্‌রদিকে দাওয়াতদেয়ারহেদায়েত নসীবকরেন। যদিওঅনেক মানুষসুন্নাহ্‌রপ্রতিবীতশ্রদ্ধ।হাসবুনাল্লাহুওয়া নেমা’লা ওয়াকিল।লা হাওলাওয়ালাকুয়্যাতাইল্লা বিল্লাহিলআলিয়্যিলআযিম (আল্লাহ্‌ইআমাদের জন্যযথেষ্ট। তিনিকতই না উত্তমঅভিভাবক। সুউচ্চসুমহানআল্লাহরসাহায্য ছাড়া (পাপকাজ থেকে দূরেথাকার) কোনোউপায় এবং (সৎকাজকরার) কোনো শক্তিকারো নেই)।

এরপর পুরুষহলে একটিলুঙ্গি ও চাদরপরিধান করবে।মুস্তাহাব হচ্ছে-এ দুইটি চাদরসাদা ওপরিস্কারহওয়া। মুস্তাহবহচ্ছে- দুইটিস্যান্ডেলপায়ে দিয়ে ইহরামকরা। যেহেতুনবীসাল্লাল্লাহুআলাই্হি ওয়াসাল্লামবলেছেন, “তোমাদেরকেউ যেন একটিলুঙ্গি, একটিচাদর ও একজোড়াস্যান্ডেলপায়ে দিয়ে ইহরামকরে।”[মুসনাদেআহমাদ]

আর মহিলা হলেযে কাপড় ইচ্ছাসে কাপড় পরেইহরাম করতেপারেন; কালোকাপড় হোক,সবুজ কাপড় হোককিংবা অন্যকোন রঙের কাপড়হোক। তবে,পুরুষেরপোশাকের সাথেসাদৃশ্যগ্রহণ থেকেসাবধান থাকতেহবে। ইহরাম অবস্থায়নারীর জন্যনিকাব ওহাত-মোজা পরানাজায়েয। তবেতিনি অন্যকিছু দিয়ে মুখও হাতেরকব্জিদ্বয়ঢেকে রাখবেন।কেননা নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামইহরামকারীনারীকে নিকাবও দুইহাতেমোজা পরতেনিষেধকরেছেন। কোনকোন সাধারণমুসলমান যেমনে করেথাকেন,নারীদেরকেসবুজ কিংবাকালো রঙেরপোশাকে ইহরামকরতে হবে— এর কোনভিত্তি নেই।

এরপর গোসল,পরিচ্ছন্নতাও ইহরামেরকাপড় পরিধানশেষে মনে মনেহজ্জ কিংবাউমরা যেটাপালন করতে ইচ্ছুকসেটার নিয়তকরবে। যেহেতুনবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি্ ওয়াসাল্লামবলেছেন, “সকলআমল নিয়্যতঅনুযায়ী মূল্যায়িতহয়। আরপ্রত্যেকব্যক্তি যানিয়ত করেসেটাই পায়।”

তিনি যা নিয়তকরেছেন সেটাউচ্চারণ করাশরিয়তসম্মত।যদি তিনি উমরাকরার নিয়তকরেন তাহলে বলবেন:‘লাব্বাইকাউমরাতান’ কিংবা ‘আল্লাহুম্মালাব্বাইকাউমরাতান’। আর যদিতিনি হজ্জকরার নিয়তকরেন তাহলেবলবেন: ‘লাব্বাইকাহাজ্জান’ কিংবা ‘আল্লাহুম্মালাব্বাইকাহাজ্জান’। কেননা নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটাকরেছেন। যদিহজ্জ ও উমরাউভয়টার নিয়ত করতেচান তাহলেউভয়টাকেএকত্রিত করেতালবিয়াবলবেন: ‘আল্লাহুম্মালাব্বাইকাউমরাতান ওহাজ্জান’। এক্ষেত্রেউত্তম হচ্ছে- গাড়ীকিংবা পশুরপিঠে আরোহণকরার পর নিয়তউচ্চারণ করা।কেননা নবী সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামসওয়ারীতেআরোহণের পর তালবিয়াপড়েছেন, আরসওয়ারী তাকেনিয়ে যাত্রাশুরু করেছে।আলেমগণেরমতামতেরমধ্যে এটিসবচেয়েশুদ্ধ। ইহরাম ছাড়াঅন্য কোনআমলেরক্ষেত্রেনিয়ত উচ্চারণকরাশরিয়তসিদ্ধনয়; কেননাইহরামের নিয়তউচ্চারণকরাটা নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি্ ওয়া সাল্লামথেকে বর্ণিতহয়েছে।

পক্ষান্তরে,নামায ওতাওয়াফইত্যাদিআমলের কোনটিরক্ষেত্রেনিয়ত উচ্চারণকরা অনুচিত। তাইকেউ এভাবেবলবে না যে, نَوَيْتُأنْ أُصَلِّيَ كَذَا وكَذَا (আমি অমুকঅমুক নামাযেরনিয়ত করেছি)।এ রকমও বলবেনা যে, نَوَيْتُ أَنْ أَطُوْفَ كَذَا (আমিঅমুক তাওয়াফকরার নিয়তকরেছি)। বরং এধরণেরউচ্চারণকরাটা নব্যবিদাত। আর এটিস্বজোরে বলাআরও বেশিনিন্দনীয় ওকঠিন গুনাহ।যদি নিয়তউচ্চারণকরাটাশরিয়তসিদ্ধহত তাহলে রাসূলসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটাবর্ণনা করতেনএবং তাঁর কথাকিংবা কাজেরমাধ্যমে উম্মতেরজন্য বিষয়টিসুস্পষ্ট করেযেতেন এবং সলফেসালেহীনগণ তাপালনে অগ্রণীথাকতেন।

যখন নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেএমন কিছুপাওয়া যায়নি,সাহাবায়েকেরাম থেকেওএমন কিছুবর্ণিত হয়নি-এতে করে জানাগেল যে, এটি বিদাত।নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“সবচেয়ে মন্দবিষয় হচ্ছেনব্যবিষয়গুলো। আরপ্রত্যেকটি বিদাতহচ্ছেভ্রষ্টতা”।[সহিহমুসলিম] নবীসাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লামবলেছেন, “যেব্যক্তিআমাদেরদ্বীনে এমনকিছু চালু করেযা এতে নেইসেটাপ্রত্যাখ্যাত”।[সহিহবুখারী ও সহিহমুসলিম] সহিহমুসলিমের বর্ণনায়আছে “যেব্যক্তি এমনকোন আমল করেযার ব্যাপারেআমাদেরঅনুমোদন নেইসেটাপ্রত্যাখ্যাত।”[সমাপ্ত]

মাননীয় শাইখআব্দুল আযিযবিন বায

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android